ঢাকা | সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৪ - ৬:১২ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনামঃ

আ.লীগ, কখনো বিএনপি পরিচয়ে অত্যাচার! সরকারি স্থাপনা দখল; আতঙ্কে বসবাসরতরা!

  • জাগো নিউজ ডট নেট
  • আপডেট: Wednesday, September 18, 2024 - 9:08 pm
  • News Editor
  • পঠিত হয়েছে: 5 বার

নিজস্ব প্রতিবেদক

যখন যে রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় যায় সে দলের নেতা বনে যান। কখনো আ.লীগ কখনো বিএনপি পরিচয়ে অত্যাচার চালায় সাধারণ মানুষের উপর। রাজধানীর সূত্রাপুর এলাকার সরকারি স্থাপনা আশালতা পরিচ্ছন্ন নির্বাসন ভবনের কয়েকটি বাসা দখল ও বসতিদের রুমে তালা লাগিয়ে, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নসহ নানা অভিযোগে অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা মাসুম। তাছাড়া সে ওই এলাকার ইয়াবা ব্যবসায়ী বলে গোযেন্দা সূত্র জানায়।

সূত্র জানায়, মাসুমের নেতৃত্বে সিরাজ ও ছাত্রলীগ নেতা ইমন, রাসেল রানা, নাজিম, ও ফাহিম অত্র এলাকায় বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রম করে আসছে। সম্প্রতি এক অনুসন্ধানে সন্ধানে এসব তথ্য উঠে এসেছে। একাধিক ভুক্তভোগ করেছেন।

সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের সূত্র এসব তথ্য জানা যায়,সুত্রাপুর ও গেন্ডারিয়া এলাকায় যারা এসব নৈরাজ্য যারা করছে তাদের অধিকাংশের রাজনৈতিক পরিচয় আওয়ামী লীগ নেতা, যুবলীগ নেতা ও ছাত্রলীগ নেতা।

স্থানীয়রা জানান, এই চক্রটি কখনো আওয়ামী লীগ কখনো বিএনপি। আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় ছিল তখন তাপসের নাম বিক্রি করে সাধারণ মানুষকে অনেক অত্যাচার করেছে। ৫ ই আগস্টে শেখ হাসিনা সরকার পদত্যাগের পর এরা বিএনপি বলে দাবি করে সাধারণ মানুষকে অত্যাচার করছে।

ওই ভবনে গিয়ে জানা যায়- মাসুমের কথা না শুনলে এলাকার সন্ত্রাসীদের পিছনে লাগিয়ে দেওয়া হয়। ওই ভবনে বসবাসরত বাসার মালিকদের প্রথমে বিদ্যুৎ এর লাইন কেটে দেয় হয়। অপছন্দের রুমের বরসতীদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। পরে রুমে তালা দেয়া হয়। এরপর বাসার লোকজন এসে তালা ভেঙে রুমে প্রবেশ করে। বর্তমান ভবনটি এ চক্রটি দখল করে রেখেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

শীর্ষ সন্ত্রাসী মাসুমের নেতৃত্বে সূত্রাপুর এলাকায় সরকারি ভবন সহ বিভিন্ন স্থাপনা দখলের চুক্তি নেওয়া হয়। এছাড়া অভিযোগ আছে মাসুম সুত্রাপুর এলাকায় চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও মার্ডার মামলার আসামি। তার বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে।

আশালতা পরিচ্ছন্ন নির্বাসনের বসবাসরত বেবি বেগম অভিযোগ করে বলেন, আমার উপর অনেক অত্যাচার করা হয়। বাসায় প্রবেশের সময় লাঠিসোটা নিয়ে আমার পরিবারের উপর হামলা করা হয়। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছি। যুবলীগ নেতা ও ছাত্রলীগ কিছু সন্ত্রাসীরা আমাদের সাথে খুব খারাপ ব্যবহার করছে। তারা ছাত্রলীগ এবং যুবলীগের পদধারী নেতা ছিল ৫ আগস্টের পর আমাদের রুমে প্রবেশ করতে বাধা দিচ্ছে। অথচ সরকারিভাবে এই রুম আমাদের নামে বরাদ্দ।

বিউটি বেগম নামের আরেক ভুক্তভোগী অভিযোগ করে বলেন, এলাকার কিছু সন্ত্রাসী আমাদের বাসায় প্রবেশ করতে বাধা দেয়। আমরা অবিলম্বে এদের বিচার চাই প্রশাসনের কাছে আমাদের অনুরোধ আমাদের যেন সহযোগিতা করে। তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পর আমরা নিরাপত্তাহীনতাই রয়েছি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে কোন সহযোগিতা পাচ্ছি না। আমরা সেনাবাহিনীর সহযোগিতা চাই সেনাবাহিনী এসে তদন্ত করুক এবং দেখুক আমরা কতটা মানবিক জীবন যাপন করছি। বাসায় কেউ দেখতে মানুষ ঢুকতে না পারে তাহলে তার আর কিছু থাকে না।

সুমনা নামের আরেক ভুক্তভোগী জানান, মাসুমের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ নেতা ইমন সিরাজ সহ অনেকেই আধিপত্য বিস্তারের জন্য আমাদের ভয়-ভীতি দিয়ে এলাকা ছাড়া করার চেষ্টা করছে। কয়েকবার আমার বাসার বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দিয়েছে মাসুম। আমি নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি প্রশাসনের সহযোগিতা চাই।

সূত্রাপুর ও গেন্ডারিয়া এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে যদি কেউ কথা বলে তাহলে তাদের উপর হামলার ঘটনা ঘটে। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি এমন ঘটনা ঘটেছে একাধিক ভুক্তভোগী এসব অভিযোগ করেছেন।

সূত্র জানায়, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের জন্য তারা বিভিন্ন মানুষের উপর অতর্কিত হামলা করে। সম্প্রতি ১৪ সেপ্টেম্বর ধুপখোলা গেন্ডারিয়া মাঠের সামনে আনুমানিক রাত ১১ টার দিকে মোহাম্মদ সোহেল নামের এক ব্যবসায়ের উপর হামলা হয়।

এ সময় সোহেল আমরা কারীদের কাছে জানতে চাইলে আমরা অপরাধ কি? হামলাকারীরা বলতে থাকে আমাদের এলাকায় ব্যবসা-বাণিজ্য করতে হলে নিয়মিত চাঁদা দিতে হবে। যাদের উপর হামলা করে তাদের মাসুম ও তার দলবল জানায় নিয়মিত আমাদের চাঁদা দিবি আর না হয় ব্যবসা করতে পারবি না।

এই ঘটনায় সোহেল মাথায় ব্যাপকভাবে আঘাত পান এবং একাধিক সেলাই লাগে। এই ঘটনায় সোহেল গেন্ডারিয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে গেন্ডারিয়া থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা এঙ্কুর সরকার বলেন, একটি অভিযোগ পেয়েছি ঘটনা তদন্ত চলছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুব শীঘ্র আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

চতুর্থ তালা ও পঞ্চম তালার একাধিক ভবনে বসবাসরতরা জানান, পরিচ্ছন্ন ভবনে যারা বসবাস করেন (ভবনপ্রাপ্ত) তাদের প্রবেশ করতে বাধা দেয় মাসুম সিরাজের নেতৃত্বাধীন বহিরাগত সন্ত্রাসীরা।

ওই ভবনটিতে সিটি কর্পোরেশনের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মকর্তা কর্মচারীরা বসবাস করেন। বরাদ্দকৃত ভবনের বসবাসরতদের বাসা থেকে বের করে দিয়ে এই সন্ত্রাসীরা সেখানে আধিপত্য বিস্তার করেন এবং তাদের বিভিন্ন ভয়-ভীতি দেখায়। এজন্য অনেক বসবাসরতরা চলাচল করতে ভয় পায়।

৫ আগস্টে সরকার পতনের পর আধিপত্য বিস্তারের জন্য এবং জোরজবস্তি করে একটি কমিটি তৈরি করেছে। সেই কমিটির সভাপতি ওয়াসিম ও সাধারণ সম্পাদক মাসুম ও সহ-সভাপতি সিরাজুল ইসলাম। এরা ওই ভবনের দায়িত্বশীল কেউ না। অথচ কমিটির নামে বহিরাগত কিছু মানুষ প্রবেশ করিয়া ভবনটি দখল করে আছে।

কথিত এই কমিটির কিছু নেতারা ওই ভবনের বসবাসের রক্ত পুরাতন বাসিন্দাদের জানায়, আপনাদের কাগজপত্র নাই বাসা থেকে বের হয়ে যান।

জানা যায় যুবলীগ এবং ছাত্রলীগের এই নেতা কর্মীরা- বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর নির্মমভাবে অত্যাচার চালায় এবং হামলা করে।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে সূত্রাপুর আশালতা পরিচ্ছন্ন নির্বাসনের নেতা মাসুম বলেছেন, আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ সত্যি নয়। আপনি সরাসরি আসুন অথবা কোথাও বসুন আমার সঙ্গে কথা বলুন। আগে সংবাদ প্রচার করবেন না।

জোগো নিউজ/কেকে